মডিউল - ৩
বাল্যবিবাহ, এর কারণ, কুফল ও প্রতিরোধ
বাল্যবিবাহ ও কৈশোরকালীন মাতৃত্ব
- বাংলাদেশের আইনে বিবাহযোগ্য বয়স মেয়েদের জন্য কমপক্ষে ১৮ ও ছেলেদের, ২১ বছর; এর নিচে হলে তা বাল্যবিবাহ
- শতকরা ৫১জন মেয়ের ১৮ বছর বয়সের পূর্বে এবং শতকরা ১৫.৫ জনের ১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায় (এমআইসিএস, ২০১৯)
- ২৮% মেয়েরা ১৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে তাদের প্রথম সন্তানের মা হন
- বিবাহিত মেয়েদের মধ্যে (১৫-১৯ বছরের) প্রতি হাজারে ১০৮টি জীবিত শিশুর জন্ম দিয়ে থাকে (বিডিএইচএস ২০১৮)
- দরিদ্রতা, সমাজিক নিরাপত্তা, সচেতনতার অভাব ও জেন্ডার বৈষম্যের কারণে কিশোর-কিশোরীরা অপুষ্টি, বাল্যবিবাহ, অপরিকল্পিত, অপ্রত্যাশিত ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণের শিকার হয়ে থাকে যা তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
বাল্যবিবাহের কারণ
- দরিদ্রতা
- কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার দায়মুক্ত হওয়া
- সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা
- শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব
- মেয়েশিশুর প্রতি অবহেলা বা তাকে বোঝা মনে করা
- স্কুল থেকে ঝরে পড়া
- বিবাহ আইন সম্পর্কে ধারণা কম থাকা
- বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া
- প্রচলিত সামাজিক প্রথা ও কুসংস্কার, এবং
- জেন্ডার বৈষম্য
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয়
বাল্যবিবাহ কিশোরীর জীবনে চরম বিপদ ডেকে আনে - কারণ, বিয়ের পরপরই কিশোরী গর্ভধারণ করে যা তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এসময় কিশোরীর নিজেরই শারীরিক বৃদ্ধি অসম্পূর্ণ থাকে যা গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত নয়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে যা করা উচিত -
- ছেলে-মেয়ে সকলের জন্ম নিবন্ধন করা
- বিয়ে পড়ানোর সময় কাজি যেন অবশ্যই জন্মসনদ দেখে বিয়ে পড়ান সে ব্যাপারে কাজিকে সচেতন করা
- বাল্যবিবাহের আইন সম্পর্কে কাজি, অভিভাবক ও জনসাধারণকে সচেতন করা
- বাল্যবিবাহ ও এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা
- বাল্যবিবাহ হলেও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার ও দেরিতে সন্তান গ্রহণে কিশোর-কিশোরী ও অভিভাবকদের সচেতন করা
- কিশোর-কিশোরীদের জন্য উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা
- ‘বাল্যবিবাহ’ নিয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে আলোচনা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা
- বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ ও বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা-এর বাস্তব প্রয়োগে সংশ্লিষ্টদের সঠিক দায়িত্ব পালন
কৈশোরকালীন গর্ভধারণ প্রতিরোধে করণীয়
নিরাপদ মাতৃত্বেও জন্য কৈশোরকালীন গর্ভধারণ যেন না হয় সজন্য আমাদের বিশেষ বিশেষ জায়গায় কাজ করতে হবে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :
- বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা
- Ending Child Marriage - School
-
- Ending Child Marriage - Groom
- দেশের প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ (১৮ বছরের পূর্বে মেয়েদের বিয়ে নয়)
- পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান
- কৈশোরে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা
- কৈশোরে বিয়ে হলেও দেরিতে সন্তান গ্রহণে স্বামী, স্ত্রী ও অভিভাবকদের সচেতন করা
- কৈশোরকালীন গর্ভধারণের কুফল ও এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা
- কৈশোরকালীন বিয়ে ও গর্ভধারণের বিষয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে আলোচনা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা