Module - 1
বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যের র্বতমান পরিস্থিতি ও
স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য, মনোসামাজিক সহায়তা, মনোসামাজিক শিক্ষা
- স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য, মনোসামাজিক সহায়তা
স্বাস্থ্য
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে (১৯৪৮), স্বাস্থ্য শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতিই নয় বরং এমন একটি অবস্থা যেখানে পরিপূর্ণ শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতা বিদ্যমান।
মানসিক স্বাস্থ্য
মানসিক স্বাস্থ্য হল এমন একটি অবস্থা যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করতে পারে, জীবনের দৈনন্দিন চাপকে মোকাবেলা করতে পারে, উৎপাদনশীলভাবে কাজ করতে পারে এবং তার সমাজে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।
মনোসামাজিক সহায়তা
এটি এমন এক ধরণের সেবা যার দ্বারা মানুষ আত্মসচেতন হওয়ার মাধ্যমে নিজের আচরণ ও মনোভাবের কাঙ্খিত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়।
মনোসামাজিক শিক্ষা হল এমন এক ধরনের শিক্ষণ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির আকস্মিক বিপর্যয়, বিপত্তি, উৎপীড়ন, নিপীড়নের ফলে যে মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হয় তা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ও স্বাভাবিক জীবনে মানিয়ে নিতে সহায়তা করে।
মনোসামাজিক শিক্ষা ব্যক্তিকে তার প্রাত্যহিক জীবনে স্বাভাবিক কর্মকান্ড পরিচালনায় সহায়তা করে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করে।
মনোসামাজিক সহায়তাকারী সাধারণত মনোবিজ্ঞানীদের কাছ থেকে অথবা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মনোসামাজিক কাউন্সিলরের কাছ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। তারা নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন মনোসামাজিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন। মনোসামাজিক সহায়তাকারী প্রাথমিকভাবে ক্লায়েন্টকে সহায়তা করতে পারেন এবং ক্লায়েন্টের প্রয়োজন অনুযায়ী রেফার করতে পারেন। এক্ষেত্রে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মনোসামাজিক কাউন্সিলরের কাছ থেকে নিয়মিত সুপারভিশন একটি অপরিহার্য বিষয়।
আজকের কিশোরকিশোরীরা ভবিষ্যতে জাতিকে নেতৃত্ব দিবে। কাজেই তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা অপরিহার্য এবং মনোসামাজিক শিক্ষা কিশোরকিশোরীদের সক্ষম ব্যক্তিত্বে পরিণত করবে। কিশোরকিশোরীরা দিনের একটি বড় সময় বিদ্যালয়ে কাটিয়ে থাকে। তাই বিদ্যালয় হতে পারে একটি উপযুক্ত স্থান যেখানে কিশোরকিশোরীদের মনোসামাজিক শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব।সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার জন্য বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথাগুলো শেয়ার করে মানসিক চাপ, রাগ, ভীতি ইত্যাদি কমানো ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা। বাল্যবিবাহ, যৌন নির্যাতন, সাইবার বুলিং, শিশু অধিকার ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কারণে সৃষ্ট মানসিক অবস্থা নিয়ে কথা বলার মতো একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা।
- মনোসামাজিক সহায়তাকারীর গুনাবলী
মনোসামাজিক সহায়তাকারী যে ধরনের সেবা দিয়ে থাকেন তার জন্য বিশেষ কিছু গুণাবলী থাকা অত্যন্ত দরকার। কারণ মনোসামাজিক সহায়তাকারীকে মানুষের অত্যন্ত কাছাকাছি গিয়ে কাজ করতে হয়।একজন মনোসামাজিক সহায়তাকারীর গুণাবলী :
-
- মনোযোগী শ্রবণ
- বিশ্বাসযোগ্যতা
- গোপনীয়তা রক্ষা করা
- সহনশীলতা
- সহমর্মিতা
- নিরপেক্ষতা
- অকৃত্রিমতা
- হাস্যরস বোধ
- শর্তহীনভাবে গ্রহণ করার ক্ষমতা
- আত্মসচেতনতা
- নমনীয়তা ও প্রতিজ্ঞা রক্ষা করা
১) স্বাস্থ্য হলো শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে সুস্থ থাকা।
২)মানসিক স্বাস্থ্য সম্বলিত ব্যক্তি তার দক্ষতাকে, সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে যে কোন পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করতে পারে।
৩)মনোসামাজিক সহায়তা ব্যক্তিকে তার আচরণ ও মনোভাবের কাঙ্খিত পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে।
৪) আমাদের জীবনে কোন সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হলে, দৈনন্দিন উদ্বেগের সাথে খাপ খাওয়ানো ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমস্যা হলে কখনো কখনো মনোসামাজিক সহায়তা গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে।
৫)মনোসামাজিক সহায়তাকারীরা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, দক্ষতা ও গুণাবলী প্রয়োগের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে থাকেন।