Module - 3
আবেগ ব্যবস্থাপনা
আবেগ হলো এক ধরনের মানসিক অবস্থা যা চিন্তন, অনভূতি, আচরণগত প্রতিক্রিয়া এবং আনন্দ/বেদনার মাত্রার সাথে সম্পর্কিত। আবেগের ফলে আমাদের নানা রকম শারীরিক, আচরণগত এবং চিন্তার পরিবর্তন হয়।
১) সুখ
২) দুঃখ
৩) ভয়
৪) রাগ
- কেন আবেগ ব্যবস্থাপনা করা গুরুত্বপূর্ণ
১) দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনেক নেতিবাচক ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ফলে আমরা নানা ধরনের আবেগীয় সংকটের সম্মূখীন হই, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কি করতে হবে, কিভাবে করতে হবে তা নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তা ও দ্বিধায় ভূগি।
২) আবেগ ব্যবস্থাপনা ব্যক্তিকে আত্ম নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করবে, নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে এবং এ ধরনের পরিস্থিতিতে কিভাবে প্রতিক্রিয়া করতে হবে তাতে সহায়তা করবে।
৩) ব্যক্তি তার গুনাবলীগুলো উপলদ্ধি করতে পারবে এবং ফলপ্রসূভাবে কাজ করতে পারবে।
৪) আত্মবিশ্বাস, আত্মনিয়ন্ত্রন ক্ষমতা এবং আত্মসম্মানবোধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
১) নিজের অনভূতি, প্রতিক্রিয়া এবং মানসিক অবস্থার প্রতি খেয়াল করা এবং বোঝা
২) নিজের অনভূতি ও আচরণের দায়িত্ব নেওয়া
৩) নিজের সফলতার উপর ফোকাস করা এবং এর জন্য নিজেকে প্রশংসা করা
৪) প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় অতিবাহিত করা
৫) মুক্তমনা হওয়া ও চারপাশে যা ঘটছে তা গ্রহণ করা
৬) বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা
৭) পছন্দনীয় ইতিবাচক কাজ করা (পছন্দের বই পড়া, গান শোনা)
৮) ডায়েরী লেখা (ঘটে যাওয়া ঘটনা, নিজের চিন্তা ও অনভূতি লেখা)
৯) জীবনের ইতিবাচক ঘটনার প্রতি ফোকাস করা
১০) ব্যায়াম করা
১১) নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়া
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (অচঅ) এর মতে, “উদ্বেগ হলো এক ধরনের আবেগ যাকে তীব্র অনভূতি, দঃশ্চিন্তা এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করার মতো শারীরিক পরিবর্তনগুলো দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।” স্বাভাবিক মাত্রায় উদ্বেগের অনভূতি থাকা ভালো, যেটা ব্যক্তিকে কোন বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত ও সহায়তা করে। তবে উদ্বেগ বেশি মাত্রায় থাকলে ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর হয় ফলে ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবন যাত্রার মানব্যহত হয় এবং ব্যক্তির মানসিক অবস্থা হুমকির সম্মুখীন হয়।
১) চাহিদা ও যোগানের মধ্যে পার্থক্য থাকা
২) অবাস্তব প্রত্যাশা
৩) আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব
৪) প্রত্যাখ্যাত ও বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়
৫) তুলনা করা
৬) কর্মক্ষেত্র ও স্কুলের কাজের চাপ
৭) ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি
৮) অর্থনৈতিক সমস্যা
৯) অসুস্থতা
১০) নেতিবাচক অভিজ্ঞতা ইত্যাদি
১) মানসিক লক্ষ
- অত্যধিক রাগ
- বিরক্ত বোধ
- মনোযোগের অসুবিধা
- অস্থিরতা
- যেকোন পরিস্থিতি খুব বিপজ্জনক মনে করা
- খারাপ কিছু ঘটবে বলে আশংকা
- নেতিবাচক চিন্তা
২) শারীরিক লক্ষ্য
- হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
- রক্ত চাপ বেড়ে যাওয়া
- বমি বমি ভাব
- ঘাম হওয়া
- মখ শুকিয়ে যাওয়া
- ডায়রিয়া
- পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা
- শ্বাস কষ্ট
৩) আচরণগত লক্ষ্য
- ঘুম না হওয়া বা ঘমের পরিমান বেড়ে যাওয়া
- পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা
- খাবারে অরুচি বা অত্যধিক পরিমান খাবার গ্রহণ করা
- অলসতা বা অনীহা
- মাদক দ্রব্য গ্রহণ করা/মদ্যপান করা
- প্রত্যাহারমূলক আচরণ
- মানসিক উদ্বেগ থেকে বের হয়ে আসার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় উপায়
মানসিক উদ্বেগ থেকে বের হয়ে আসার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কিছু উপায় নিম্নে উল্লেখ করা হল:
- নিজের চিন্তা, অনভূতি ও আচরণের প্রতি খেয়াল করা এবং এগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করা
- বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা
- নিজেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে রাখা যেমন: ১০-১৫ মিনিট হাঁটা, এক কাপ চা তৈরি করে খাওয়া, গোসল করা ইত্যাদি
- নিজের সাথে ইতিবাচক কথা বলা
- যে পরিস্থিতি বা ঘটনা আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে তা মেনে নেওয়া
- পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানো
- নিজের পছন্দের ইতিবাচক কাজ করা
- পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
- ভালো স্মৃতি বা সফলতার কথা ভাবা
- নিজেকে পুরুস্কৃত করা ও নিজের প্রশংসা করা
- দৃঢ়তার সাথে “না” বলতে শেখা
- ব্যায়াম করা
- নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়া
- প্রয়োজনে মনোবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হওয়া
সামাজিক উদ্বেগ হলো অন্যদের চোখে বিচার হওয়ার এবং অন্যদের দ্বারা নেতিবাচকভাবে মূল্যায়িত হওয়ার ভয়।
সামাজিক উদ্বেগে ভুগলে নিজেকে অযোগ্য বা অন্যদের তুলনায় ছোট মনে করে, নিজেকে নিয়ে অতিরিক্ত সচেতনতা, লজ্জা, অপমান এবং বিষন্নতায় ভোগে।
১. ঘেমে যাওয়া
২. গলার স্বর কাঁপা
৩. দ্রুত হৃদস্পন্দন
৪. ঘুম ঘুম ভাব
৫. মনটাকে শূন্য মনে করা
৬. মাংসপেশীতে টান ভাব
৭. গাল লাল হয়ে যাওয়া
৮. সামাজিক কোন অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা
৯. নতুন কারো সাাথে পরিচিত হওয়া ও কথা চালিয়ে যেতে সমস্যা বোধ করা
১০. কারো সামনে বসে খেতে সমস্যা বোধ করা
১১. চোখের দিকে তাকিয়ে কথা না বলা
- সামাজিক উদ্বেগ থেকে বের হয়ে আসার উপায়
১) দ্রুত কোন পেশাদার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া
২) নিয়মিত কোন ডায়েরী লেখা যাতে প্রতিদিন কি মানসিক চাপের কার ছিল তার উল্লেখ থাকবে
৩) যা উপভোগ্য তা করে কিছুটা সময় কাটানো
৪) যেকোনো ধরনের নেশা থেকে নিজেকে দূরে রাখা
৫) নেতিবাচক চিন্তা গুলোকে চিহ্নিত করা
৬) নেতিবাচক চিন্তা গুলোকে চ্যালেঞ্জ করা